ঐতিহাসিক খাপড়া ওয়ার্ড দিবস আজ
প্রকাশিত : ০৮:৫২, ২৪ এপ্রিল ২০২১
ঐতিহাসিক খাপড়া ওয়ার্ড দিবস আজ। ১৯৫০ সালে আজকের এই দিনে রাজশাহী কারাগারের খাপড়া ওয়ার্ডে থাকা সাতজন কমিউনিস্ট ও বামপন্থি রাজবন্দিকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। নিহত হন কুষ্টিয়ার মোহিনী মিলের শ্রমিকনেতা হানিফ শেখ, রেল শ্রমিকনেতা সুধীন ধর ও বিজন সেন, তেভাগা আন্দোলনের বীর সেনানী কম্পরাম সিংহ, রেলওয়ের লাল ঝাণ্ডা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা দেলোয়ার হোসেন, ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজের স্নাতক পরীক্ষার্থী সুখেন ভট্টাচার্য এবং ছাত্র ফেডারেশনের নেতা ও কলেজছাত্র আনোয়ার হোসেন।
অত্যাচার ও জুলুমের বিরুদ্ধে জেলের মধ্যেই আন্দোলন শুরু করেন কমিউনিস্ট বন্দীরা। সরকার বন্দীদের ওপর দমন-পীড়নের মাত্রা বাড়িয়ে দিলে প্রতিবাদে বিভিন্ন জেলে কমিউনিস্ট বন্দীরা অনশন করতে থাকেন।
২৪ এপ্রিল, সোমবার আনুমানিক সকাল সোয়া ৯টায় রাজশাহী জেল সুপারিনটেনডেন্ট এডওয়ার্ড বিল দলবল নিয়ে হঠাৎ করেই খাপড়া ওয়ার্ডে প্রবেশ করেন। একপর্যায়ে ‘কমিউনিস্টরা ক্রিমিনাল’ বলে গালি দিতে দিতে এডওয়ার্ড বের হন ও দরজা বন্ধের নির্দেশ দেন। বিল বাঁশি বাজানোর সঙ্গে সঙ্গেই পাগলা ঘণ্টা বাজতে শুরু করে। বিলের নির্দেশে সিপাহিরা বাঁশ দিয়ে জানালার কাচ ভেঙে, জানালার ফাঁকের মধ্যে বন্দুকের নল ঢুকিয়ে গুলি করতে থাকে। রক্তে ভেসে যায় খাপড়া ওয়ার্ড। ঘটনাস্থলেই পাঁচজন শহীদ হন। দুজন রাতে মারা যান।
নির্বিচারে গুলিবর্ষণের ঘটনায় আহত হয়েছিলেন ৩২ জন। তাদের অনেককেই পরে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছিল। তখন থেকেই দিনটিকে ‘খাপড়া ওয়ার্ড হত্যা দিবস’ হিসেবে স্মরণ করা হয়।
১৯৪৭ সালে দেশভাগের কারণে পাকিস্তান সৃষ্টি হলে নির্যাতনের স্টিম রোলার নেমে আসে দেশের কমিউনিস্ট ও বামপন্থা সমর্থক কৃষক, শ্রমিক এবং ছাত্র সমাজের ওপর। ১৯৪৮-৫০ সালের মধ্যে বেশ কয়েকটি রক্তক্ষয়ী কৃষক আন্দোলন হলে কঠোর হাতে দমনের নীতি নেয় তৎকালীন মুসলিম লীগের শাসকরা।
এসএ/